এরশাদ নবী খান: মার্কিন নাথান এন্ডারসন হলেন একজন প্রকৃত নায়ক। কেবলমাত্র তাঁর একটা রিপোর্টের কারণে ভারতের সর্ব বৃহৎ ধনী গৌতম আদানি ২৩ বিলিয়ন ডলার অর্থাৎ ৳২ লক্ষ ৫৩ হাজার কোটি বাংলাদেশি টাকা ক্ষতির মুখে পতিত হয়ে পড়েছেন। এন্ডারসন হলেন ‘হিনডেনবার্গ’ নামক একটি সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা, যার প্রধান কাজ হলো মানবনির্মিত দুর্যোগ এবং আর্থিক কেলেঙ্কারির তদন্ত করে সত্যোটুকু পুরো দুনিয়ার জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া। মাত্র ১০ জন সহকর্মী নিয়েই তিনি এই অসাধ্য সাধন করে চলেছেন। ২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এন্ডারসনের হিন্ডেনবার্গ আদানি গ্রুপের আর্থিক দুর্নীতি প্রকাশ্যে এনে পুরো পৃথিবীর মানুষকে অবাক করে দিয়েছে। শেয়ারবাজারে ঝড়ের গতিতে আদানি গ্রুপের পতন শুরু হয়ে গেছে। এই পতনের শেষ কোথায়? তা কেউ বলতে পারছে না।

নাথান এন্ডারসন ছিলেন সামান্য একজন ট্যাক্সিচালক। কোনো এক সময় জীবিকা নির্বাহের জন্য স্টিয়ারিং হাতে ইসরায়েল দেশের বিভিন্ন প্রান্ত দাপিয়ে বেড়িয়েছেন। কিন্তু যার স্বপ্ন আকাশ ছুঁয়ে দেখার যাঁর ইচ্ছা অসাধ্য সাধন করার তার গতিরোধ করা কোনোভাবেই সম্ভব না। নাথান এন্ডারসন সেটাই প্রমাণ করে দিয়েছেন। নাথান তার সংস্থার মাধ্যমে আর্থিক কেলেঙ্কারি সম্বন্ধে আদানি গ্রুপের উদ্দেশে ৮৮টি প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন। তার একটিরও উত্তর দিতে পারেনি আদানি গ্রুপ। তবে কি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সাহায্য নিয়ে পাবলিক প্রপার্টি লুণ্ঠন করে পুরো ভারতবর্ষের সবচেয়ে ধনাঢ্য এবং বিশ্বের চতুর্থ-তম ধনীর শিরোপা অর্জন করে নেওয়া গৌতম আদানির শেষের শুরু হয়ে গেলো? বিশ্বের প্রথিতযশা অর্থনীতিবিদগণ অন্তত সেটাই মনে করছেন। কথায় রয়েছে, ‘উত্থান যতো দুর্বার গতিতে হয় পতন ঘটে তার চেয়েও দ্রুততার সঙ্গে’। ঘটনাক্রম হতে মনে হচ্ছে, সম্ভবত সেটাই ঘটতে চলেছে।

প্রায় একই সময়ে নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদিকে দোষী সাব্যস্ত করে বিবিসির ডকুমেন্টারি প্রকাশ হওয়া এবং মোদির এটিএম কার্ড গৌতম আদানির পূর্ব উগান্ডার এস আলম হয়ে উঠার চকচকে ফকফকা গল্প পশ্চিমা মিডিয়া জনসম্মুখে নিয়ে আসাকে বৃহত্তর ভারতবর্ষের ভক্তকূল মেনে নিতে পারছেন না। আমেরিকা তথা পশ্চিমা বিশ্বের হিপোক্রেসি এবং মুসলমানদের উপর করা হামলা নির্যাতন নিয়ে বৃহত্তর ভারতবর্ষের প্রাচীন সংগঠন ‘আরএসএস’ ও ‘বজরং দল’ নিরামিষ অনশন কর্মসূচির ডাক দিয়েছে। সাথে সাথে শাহরুখের ‘পাঠান’ এবং রাহুল গান্ধীর ভারতজুড়ো মার্চ বয়কট করার ঘোষণা দিয়েছে। ফেসবুক থেকে